কিশোরগঞ্জের ভৈরবে ফায়ার সার্ভিস গাড়ি পৌঁছানোর আগেই ভয়াবহ আগুনে চার দোকান পুড়ে ছাই হয়েছে। ১ ডিসেম্বর সোমবার রাতে ১০টায় উপজেলা আগানগর ইউনিয়নের আগানগর আনন্দ বাজার এলাকার চক বাজারে এই ঘটনা ঘটে। আগুন লাগার খবর তাৎক্ষণিক ভৈরব বাজার ফায়ার সার্ভিসকে জানালেও ১ ঘণ্টা পর ঘটনাস্থলে পৌঁছে ফায়ার সার্ভিসের ২টি ইউনিট। এতে করে চার দোকানির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ভৈরব বাজার ফায়ার সার্ভিস স্টেশন অফিসার মো. আল আমিন।
এ বিষয়ে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলেন, রাত ১০টায় আফসর মিয়ার মার্কেটে আগুন লাগে। এতে আফসার মিয়ার নিজের ফার্নিচারের দোকান, বাদল মিয়া, সিরাজ মিয়া ও কাইয়ুম মিয়ার দোকানে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ব্যবসায়ীদের দাবি দোকান গুলোতে প্রায় ৫০ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
ব্যবসায়ীরা আরো বলেন, গ্রাম গুলো আজ শহরে পরিণত হয়েছে সেই সাথে বিভিন্ন গ্রামে ব্যবসা বাণিজ্য প্রসার ঘটেছে। আগানগর আনন্দ বাজারে দেড় শতাধিক দোকান রয়েছে। দোকানিদের ভাগ্য ছিল চারটি দোকান পুড়ে ছাই হয়েছে। রাস্তাঘাট আরো প্রসস্থ করারসহ স্থানীয় ব্যবসায়ীদের দাবি প্রতিটি ইউনিয়নে না হোক দুইটি বা তিনটি ইউনিয়ন এক সাথে করে হলেও একটি করে ফায়ার স্টেশন করা হোক।
এ বিষয়ে মার্কেট মালিক আফছার উদ্দিন বলেন, আমি সোয়া ১০টায় আগুনের খবর পেয়ে চকবাজার আসি। এসে দেখি আগুন আমার চারটি দোকানে ছড়িয়ে পড়েছে। দোকান গুলোর মধ্যে আমার নিজের একটি ফার্নিচারের দোকান ছিল। ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেওয়ার এক ঘণ্টা পর তারা এসেছে। ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে আসতে দেরি হওয়ায় সব গুলো দোকান পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। ফায়ার সার্ভিসের প্রথম গাড়িটি পানি ছাড়া পৌঁছায়। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কাছাকাছি পানির ব্যবস্থা না থাকায় অন্য আর একটি গাড়ি খবর দিলে ১৫ মিনিট পর পানি ভর্তি গাড়ি আসে ততক্ষণে আগুন নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। ইউনিয়ন পর্যায়ে যদি ফায়ার সার্ভিস স্টেশন থাকতো তাহলে এত বড় ক্ষতি হতো না।
আরেক ব্যবসায়ী বাদল মিয়া বলেন, ধারদেনা ও বিভিন্ন এনজিও থেকে লোন তুলে আমার প্রতিষ্ঠানটি ধার করে ছিলাম। আগুনে আমার দোকানের সব পুড়ে গিয়ে আমি নিঃস্ব হয়ে গেছি। শহর থেকে ফায়ার সার্ভিস গাড়ি আসতে এক ঘণ্টা সময় লেগে যায়। ইউনিয়ন পর্যায়ে ফায়ার স্টেশন থাকলে আজকে আমার এত বড় ক্ষতি হতো না।
ব্যবসায়ী সিরাজ মিয়া বলেন, সপ্তাহ খানেক আগে কয়েক লাখ টাকা পুঁজি খাটিয়েছি দোকানে। আগুনে সব ছাই হয়েছে। এই পর্যন্ত আমাদের চকবাজারে চার পাঁচবার আগুন লেগেছে। প্রতিবারেই দোকানগুলো পুড়ে ছাই হয়েছে ফায়ার সার্ভিস সঠিক সময়ে ঘটনাস্থলে না পৌঁছার কারণে। আমার যা ক্ষতি হয়েছে হোক পরর্বতীতে যেন কোন গ্রামের ব্যবসায়ীর এমন ক্ষতি না হয়। আমরা চাই প্রতিটি ইউনিয়নে একটি করে ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন করা হয়।
ভৈরব বাজার ফায়ার সার্ভিস স্টেশন অফিসার মো. আল আমিন বলেন, রাতে অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায়। ভৈরব বাজার থেকে আগানগর বাজারের দূরত্ব ১০/১২ কিলোমিটার। এদিকে রাস্তা অনেক খারাপ ও চিকন। এজন্য গাড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে। সেখানে গিয়ে ফায়ার সার্ভিসের দুইটি ইউনিটসহ স্থানীয়দের সহায়তায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়।
তিনি আরো বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে এই আগুনের সূত্রপাত বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে হয়েছে। তবে টাকায় ক্ষতির পরিমাণ কি রকম হয়ে তা তদন্ত সাপেক্ষে বলা যাবে।